শ্রীদেবীর মৃত্যু জন্ম দিচ্ছে অনেক প্রশ্নের
নিউজ ডেস্ক: শ্রীদেবীর অকাল মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বেঁধে উঠছে।তিনি মারা গিয়েছেন গত শনিবার রাতে। প্রথমে জানা গিয়েছিল, হার্ট অ্যাটাকে। কিন্তু দু’দিন পর সোমবার বিকালে দুবাই পুলিশ জানাল, বাথটাবের পানিতে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে শ্রীদেবীর।
দুবাইয়ের জুমেইরাহ এমিরেটস টাওয়ার্স নামে যে হোটেলে শ্রীদেবী কয়েক দিন ধরে ছিলেন, তারই বাথরুমের বাথটাবের পানিতে। সামান্য উচ্চতার একটা বাথটাব। পানি ভরলেও উচ্চতা দেড় ফুটের বেশি হবে না! তাতে কী করে ডুবে গেলেন পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতার ওই অভিনেত্রী! অনেকের মনেই প্রশ্নটা ঘুরছে।
দুবাই পুলিশ জানিয়েছে, জ্ঞান হারিয়ে বাথটাবের পানিতে ডুবে গিয়েছিলেন শ্রীদেবী। কিন্তু, জ্ঞান হারালেন কী ভাবে? সে প্রশ্নের জবাব মেলেনি। এবং আশ্চর্যজনক ভাবে গত দু’দিন ধরে বলা ‘হার্ট অ্যাটাক’ শব্দটাও উধাও হয়ে গিয়েছে এ দিনের আলোচনা থেকে। তা হলে কি হার্ট অ্যাটাক হয়নি? জবাব মিলছে না। কারণ, দুবাই পুলিশ বা সে দেশের মিডিয়া সেন্টার এ দিন যে তথ্য দিয়েছে, সেখানে হার্ট অ্যাটাকের কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে জ্ঞান হারানোর কথা।
প্রশ্ন রয়েছে শ্রীদেবীর স্বামী বনি কপূরের ভূমিকা নিয়েও। কারণ, দুবাইয়ের সংবাদপত্র ‘খালিজ টাইমস’ প্রথমে জানিয়েছিল, বনি সেই সময় হোটেলে শ্রীদেবীর ঘরে ছিলেন। শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তিনি মুম্বই থেকে দুবাই পৌঁছন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি শ্রীদেবীর হোটেলেই পৌঁছেছিলেন তিনি। স্ত্রীর সঙ্গে মিনিট ১৫ আড্ডা দেওয়ার পর ডিনারের প্রস্তাব দেন। আর তাতে রাজি হয়ে যান শ্রীদেবী। ডিনারে যাবেন বলে তৈরি হতে গিয়েছিলেন বাথরুমে। কিন্তু, অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি বেরিয়ে আসেননি। তখন বনি বাথরুমের দরজা ভেঙে স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। অচৈতন্য অবস্থায় শ্রীদেবী নাকি বাথটাবের ভিতরেই পড়ে ছিলেন। ঘরে এনে স্ত্রীর সংজ্ঞা ফেরানোর নানা চেষ্টা করেন বনি। কিন্তু, কোনও কাজ হয়নি। পরে এক বন্ধুকে ডেকে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা শ্রীদেবীকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।কাপূর পরিবারের তরফে জানানো হয়, হার্ট অ্যাটাকেই মৃত্যু হয়েছে শ্রীদেবীর। আবার অন্য একটা সূত্র বলছে, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ রুম সার্ভিসে ফোন করে তাঁর ঘরে পানি দিতে বলেছিলেন শ্রীদেবী। মিনিট ১৫ পর হোটেলের এক কর্মী শ্রীদেবীর ঘরে পানি দিতে গিয়ে তাঁর কোনও সাড়া পাচ্ছিলেন না। একাধিক বার ডোর বেল বাজানোর পর যখন দরজা খোলেননি শ্রীদেবী, তখন হোটেল কর্তৃপক্ষ ভিতর থেকে বন্ধ থাকা দরজা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন। ঘরে ঢুকে তাঁরা দেখেন, শ্রীদেবী বাথটাবে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছেন। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তা হলে বনি সেই সময় কোথায় ছিলেন?
শ্রীদেবীর দেহের ময়নাতদন্ত এবং ফরেন্সিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে যে রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে, সেখানে বলা হয়েছে অচৈতন্য অবস্থায় জলে ডুবে মৃত্যু। অচৈতন্য কী ভাবে হলেন? একটা সময় জানা গিয়েছিল, ময়নাতদন্তে মৃতের শরীরে অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু সেই অ্যালকোহলের পরিমাণ কতটা, সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। ডেথ সার্টিফিকেটে তাঁর অচৈতন্য হয়ে পড়ার কথা থাকলেও অ্যালকোহলের কারণেই তা হয়েছিল কি না সে ব্যাপারে কোনও আলোকপাত করা হয়নি।
উঠছে আরও একটি প্রশ্ন। ভাগ্নের বিয়ের পর মেয়ে খুশিকে নিয়ে মুম্বই ফিরে এসেছিলেন বনি কপূর।দুবাই ফিরে যান দু’দিন পর। ওই দু’দিন হোটেলেই ছিলেন শ্রীদেবী। একা। তাঁকে এক বারের জন্যও ঘরের বাইরে দেখা যায়নি। কেন? অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, তবে কি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন অভিনেত্রী?
নানা প্রশ্নের উত্তর দুবাই পুলিশও খুঁজছে। তা হলে কি শ্রীদেবীর এই মৃত্যুর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য? সে প্রশ্নের উত্তর আপাতত পাওয়া মুশকিল।