মূল জাতীয় সবজি গাজর ও এর চাষাবাদ পদ্ধতি

ইংরেজি নাম ঃ- Carrot
বৈজ্ঞানিক নাম ঃ- Daucus carota

গাজর শীতকালীন মূল জাতীয় সবজি,সু-স্বাদু ও পুষ্টিকর খাদ্য। গাজর তরকারি, সালাদ ও হালুয়া করে খাওয়া যায়। গাজরের পাতা পুষ্টিকর শাক। পারিবারিক পুষ্টি যোগানে গাজর একটি উৎকৃষ্ট সবজি। গাজরের রঙ সাধারণত কমলা রঙের হয়। গাজর একটি গুল্ম প্রকৃতির উদ্ভিদ, এর রূপান্তরিত মূল খাওয়া হয়, পাতা চিরুনির দাঁতের মতো চেরা, মূলের উপরি ভাগে একগুচ্ছ পাতা থাকে।

গাজর চাষে জলবায়ু ও মাটি ঃ- গাজর শীত প্রধান অঞ্চলের ফসল, শীতকালে ভাল জন্মে। পানি নিকাশের সুবিধাযুক্ত দোঁ-আশ ও বেলে দোঁ-আশ মাটিতে সবচেয়ে ভাল জন্মে ও এটেল দোঁ-আশ মাটিতেও চাষ করা যায়।

উল্লেখযোগ্য জাত ঃ- কুয়োদা নিউ, কুয়োদা চেনটিনি, চেনটিনি রেডকোর, কিনাকো ক্রস এফ-১, সানটিনি, রয়েল ক্রস ইত্যাদি।

জমি তৈরি ঃ- গাজরের বীজ অতি ক্ষুদ্র বলে জমি ভাল ভাবে চাষ ও মই দিয়ে মাটি মিহি করে তৈরি করতে হবে।

বীজ বপন সময় ও বীজ হার ঃ- গাজরের বীজ অক্টোবর মাস হতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বপন করা যায়। তবে নভেম্বর মাস বীজ বপনের সবচেয়ে উপযোগী সময়। প্রতি শতক জমিতে ১৫-২০গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়।

বীজ বপন পদ্ধতি ঃ- সারি করে ও সরাসরি ছিটিয়ে বীজ বপন করে গাজর চাষ করা যায়। তবে সারিতে বীজ বপনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব ২৫ সেন্টিমিটার ও চারা থেকে চারার দূরত্ব ১৫ সেন্টিমিটার বজায় রাখতে হবে ও ০.৫ থেকে ১.০ সেন্টিমিটার মাটির গভীরে বীজ বুনতে হবে।

সার ও প্রয়োগ পদ্ধতি ঃ- গাজর চাষে প্রতি শতক জমিতে পঁচা গোবর-৪০ কেজি, ইউরিয়া-৮০০ গ্রাম, টিএসপি-৬০০ গ্রাম, এমওপি- ৮০০ গ্রাম, জিপসাম-৩০০ গ্রাম ও জিংক- ২০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে।
শেষ চাষের সময় সম্পূর্ণ গোবর, টিএসপি,জিপসাম, জিংক এবং অর্ধেক ইউরিয়া ও এমওপি জমিতে ছিটিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকী ইউরিয়া ও এমওপি সার সমান দুই কিস্তিতে বীজ বপনের ৩য় ও ৫ম সপ্তাহে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

সেচ ও পানি নিকাশ ঃ- গাজর চাষের জমিতে পরিমান মত সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। মাটিতে রসের অবস্থা বুঝে সেচ দিতে হবে এবং জমি থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়ার জন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অর্থ্যাৎ জমিতে এমন ভাবে সেচ দিতে হবে যেন, মাটি বেশী শুকিয়ে না যায় এবং জমি বেশী ভিজা না থাকে।

আগাছা দমন ঃ- গাজরের জমি সব সময় নিড়ানি দিয়ে আগাছা মুক্ত রাখতে হবে এবং মাটি নিড়ানি দিয়ে আলগা করে দিতে হবে।
ফসল তোলার সময় ও ফলন ঃ- জাত ভেদে ৭৫ থেকে ১২০ দিন সময়ে জমি হতে গাজর উত্তলন করা যায়। প্রতি শতক জমিতে ৮০ থেকে ১০০ কেজি গাজর উৎপাদিত হয়।

গাজরে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান ঃ- গাজরে প্রচুর পরিমানে বিটা ক্যারোটিন আছে, তাছাড়া প্রোটিন, আঁশ, শ্বেত সার, খাদ্য শক্তি, ভিটামিন-এ, থায়ামিন, রিভোফাভিন, নায়াসিন, ভিটামিন-বি৫, ভিটামিন-বি৬, ফোলেট, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফোরাইড, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-সি ও জিংক পর্যাপ্ত পরিমান।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ