কেশবপুরে মাদক ব্যবসায়ি টাওয়ার রাজ্জাক ব্যবসার প্রসার ঘটাতে ১৪ বিয়ে !
তন্ময় মিত্র বাপী, (যশোর) : নিজের মাদক ব্যবসার প্রসার ঘটাতে ও নিত্য নতুন কৌশলে ব্যবসা পরিচালনা করতেই একের পর এক বিয়ে করতে করতে ১৪ বিয়ে করে ফেলেছেন আব্দুর রাজ্জাক ওরফে টাওয়ার রাজ্জাক (৪৫)। মাদকের চোরাচালালে কিছুদিন ব্যবহার করার পরই সুন্দরী এসব বিবাহিত নারীদের পরিত্যাগ করেন তিনি। এভাবেই বর্তমানে তার প্রতারনার শিকার হয়ে ১৪ নারী পথে পথে ঘুরছেন। যশোর, খুলনা ও সাতীরা জেলার বিভিন্ন থানায় ফেনসিডিল পাচার ও বিক্রির একাধিক মামলা রয়েছে রাজ্জাক ওরফে টাওয়ার রাজ্জাকের বিরুদ্ধে। সে যশোরের কেশবপুর উপজেলার বাউশলা গ্রামের তাইজুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে রাজ্জাক একটি মাদক মামলায় সাতীরা কারাগারে আটক রয়েছে। গত ৪ ফেব্র“য়ারী সাতীরা সদর থানা পুলিশ তাকে আটক করেছে। একাধিক সুত্রে জানা যায়, রাজ্জাক ফেনসিডিল পাচার ও বিক্রি কালে যেখানেই আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে থাক না কেন কখনো সঠিক ঠিকানা ব্যবহার করে না। অধিকাংশ সময় ভূল ঠিকানা দিয়ে সে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতে পারদর্শী। এভাবে ভূল ঠিকানা দিয়ে সে ১৪টি বিয়েও করেছে। তার মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তদন্তকারি কর্মকর্তারা হরহামেশা বিপাকে পড়ে থাকেন। রাজ্জাকের ২য় স্ত্রী সাথী বেগম সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামী প্রথম বিয়ে করেছে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের জোসনা বেগমকে। বর্তমানে তার চার সন্তান রয়েছে। জোসনাকে বিয়ের চার বছর পর প্রথম বিয়ে গোপন রেখে তাকে ফুসলিয়ে বিয়ে করে রাজ্জাক। সাতীরার তালা উপজেলার মিঠাবাড়ি গ্রামের সাথী বেগম অভিযোগ করে বলেন, কিছুদিন পর স্বামী তাকে দিয়ে ফেনসিডিল বহনের জন্য চাপ সৃষ্টি করায় সে তার বিরোধিতা করলে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু হয়। এনিয়ে বিরোধের এক পর্যায়ে সাথী বেগম তার বিরুদ্ধে সাতীরা আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। সাথী বেগম আরো দাবি করেন, তার সাথে সম্পর্কের অবনতি হওয়ার সুযোগে বিভিন্ন সময়ে রাজ্জাক খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারোমাইল গ্রামের আম্বিয়া খাতুন, একই উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের সাবিনা খাতুন, পাইকগাছা উপজেলার রোজিনা বেগম, তালা উপজেলার মুড়াকালিয়া গ্রামের হাজিরা খাতুন, কেশবপুর উপজেলার বাউশলা গ্রামের তহমিনা খাতুন, ভোগতি গ্রামের আসমা খাতুন, তালার সুভাষিনীর রোকসানা বেগম, একই গ্রামের রোজিনা খাতুন, মির্জাপুরের জয়নব খাতুন, পাটকেলঘাটার মেলেকবাড়ি গ্রামের শেফালি বেগম, শিরাশুনি গ্রামের মঞ্জু বেগম, সাতীরা সদরের কদমতলা আনজুয়ারা বেগমকে। সাথী বেগমের আরো অভিযোগ একের পর এক বিয়ে করার পরও বিভিন্ন প্রলোভনে রাজ্জাক একাধিক নারীকে বাড়িতে এসে রাখতেন। সাথী এসব কাজে বাধা দেয়ায় তার উপর চলতো নির্যাতন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাউশলা গ্রামের একাধিক যুবক জানান, রাজ্জাক ওরফে টাওয়ার রাজ্জাকের ফেনসিডিল বেচাকেনায় ছিল ভিন্ন ভিন্ন কৌশল। কখনো সে নিজে হাতে টাকা নিয়ে ফেনসিডিলের আদান প্রদান করতো না। সব সময়ই বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করার পর এলাকার বিভিন্ন গাছতলা, রাস্তার পাশে গাছের শেকড়ের নীচে, মাছের ঘেরের ভেড়িবাধে ফেনসিডিল রেখে সেবনকারিদের কাছে সেলফোনের মাধ্যমে সরবরাহ করতো। একারনেই তার নাম টাওয়ার রাজ্জাক হিসেবে সমধিক পরিচিত। সাথী বেগম মাদক সম্রাট আব্দুর রাজ্জাক টাওয়ারের দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি করেছেন। এব্যাপারে কেশবপুর, তালা, পাটকেলঘাটা, ডুমুরিয়া ও সাতীরা সদর থানা পুলিশের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ি রাজ্জাক টাওয়ারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২০ টির বেশি মামলা রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার আটক হলেও আইনের ফাঁক গলিয়ে জামিনে বেরিয়ে এসে সে আবারো নতুন কৌশলে ফেনসিডিলের ব্যবসা শুরু করে।