রেড, ইয়োলো ও গ্রিন জোনে ভাগ করে কিশোরগঞ্জে আসছে লকডাউনের ঘোষণা
করোনার হটস্পট কিশোরগঞ্জে জ্যামিতিক হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় জেলাব্যাপী ‘রেডজোন’ চিহ্নিত করার কাজ চলছে।
দু’এক দিনের মধ্যেই এলাকার ম্যাপিং অনুসারে অধিদপ্তরে তালিকা পাঠানো হবে। এরপরই আসছে এলাকাভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা।
আজ ১৫ জুন সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পৌনে ২টা পর্যন্ত জুম অ্যাপে দুই মাস পর অনুষ্ঠিত জেলা আইন শৃংখলা কমিটির মাসিক সভা থেকে এসব তথ্য জানায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটি ।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী ইতিমধ্যেই নমুনা পরীক্ষায় এ জেলায় মোট ৯৪৮ জনের শরীরে কোভিড-১৯ পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। আর এরমধ্যে জেলার ভৈরব উপজেলায় ৩৬৪ জন, সদর উপজেলায় ১৫৩ এবং করিমগঞ্জ উপজেলায় ৬৭, তাড়াইল উপজেলায় ৬২ জন, কুলিয়ারচর উপজেলায় ৫৯ জন, বাজিতপুর উপজেলায় ৫৭, কটিয়াদী উপজেলায় ৫১ জন,পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৪৪ জন, মিঠামইন উপজেলায় ২৭ জন, ইটনা উপজেলায় ২৩ জন, হোসেনপুর উপজেলায় ২১ জন, নিকলী উপজেলায় ১৪ জন ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় ৬ জনের কোভিড-১৯ পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংযুক্ত হয়ে মতামত তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ,সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ, র্যাবের উপ-পরিচালক লে. কমান্ডার এম শোভন খান, এনএসআই’র উপ-পরিচালক নুসরাত ইসলাম স্মৃতি, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদির মিয়া, ভৈরবের নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা, করিমগঞ্জের নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা নূর হোসেন প্রমুখ।
সভায় কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, জেলায় এখন পর্যন্ত ৯৪৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকে সুস্থ হলেও আজ ১৫ জুন সোমবার ও আক্রান্ত ৬৪৮ জন আইসোলেশনে ছিলেন।
যে কারণে সংক্রমণের সংখ্যানুপাতে এলাকাভিত্তিক জোনিং করে রেড জোন চিহ্নিত করা হচ্ছে। এর ভিত্তিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে খুব শীঘ্রই এলাকাভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করা হবে।
এ ছাড়াও তিনি জানান, কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে ‘কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল’ ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে ৫০০ শয্যার এ হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেড রয়েছে। চারটি ভেন্টিলেটরের মধ্যে দু’টি স্থাপন করা হয়েছে। আর একটি অকেজো এবং একটি এখনো স্থাপন করা হয়নি।
তবে হাইড্রোনেজাল ক্যানোলা’ দিয়ে ভেন্টিলেটরের কাজ ভালভাবে চালানো সম্ভব। কাজেই আপাতত অন্তত চারটি হাইড্রোনেজাল ক্যানোলা ক্রয় করা দরকার। প্রতিটির দাম পড়ে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা।
সভায় স্থানীয় অর্থায়নে চারটি হাইড্রোনেজাল ক্যানোলা ক্রয় করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমানা খালেদ জানান, শহরব্যাপী সিসি ক্যামেরা স্থাপনেরও একটি সিদ্ধান্ত নেয়া আছে। জেলার আইন শৃংখলার উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যবিধি পর্যবেক্ষণ ও আরোপের ক্ষেত্রেও এসব কাজে আসবে।
সূত্রমতে, সংখ্যানুপাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ইউনিয়ন গুলোকে লকডাউনের আওতায় আনা হলেও সংক্রমণের আধিক্যতার কারণে ভৈরব, সদর ও করিমগঞ্জ উপজেলা পুরোপুরি লকডাউনের আওতায় আসতে পারে।