নাটোরের বড়াইগ্রামে শিশু ধর্ষণের রিপোর্ট বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পর্যালোচনার দাবি স্বজনদের
নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে নয় বছরের এক শিশু ধর্ষণ হওয়ার পর তার ডাক্তারি রিপোর্টে অসঙ্গতি থাকায় রিপোর্টটি উচ্চতর মেডিকেল বোর্ড গঠণ করে পর্যালোচনা সহ পুরো বিষয়টি সুষ্ঠু ও নিরপে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ধর্ষণের শিকার হওয়া শিশুটির পিতা ও পরিবারের সদস্যরা।গত শনিবার দুপুরে উপজেলার বনপাড়াস্থ পাঠান মর্কেট সম্মলেন কে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শিশুটি পিতা লিখিত বক্তব্যে জানান, উপজেলার বনপাড়া পৌরশহরের পূর্ব হারোয়া এলাকার প্রতিবেশী চাঁন প্রামাণিকের ছেলে এবারের এসএসসি পরীার্থী মাহবুর রহমান (১৬) গত ২৪ জানুয়ারী দুপুর ১২টার দিকে তার শিশু কণ্যাকে বাই সাইকেল চালানো শিখাতে প্রথমে বাড়ির উঠোনে ও পরে চকলেট দিবে বলে ঘরের ভিতর ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে বাড়ি ফিরে আসলে তাকে অসুস্থ দেখালে মার জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে শিশুটি সব ঘটনা খুলে বলে এবং পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়।
ওই দিন বিকেলেই পিতা বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। শিশুটির পিতা অভিযোগ করেন, পরের দিন দুপুর দেড়টার দিকে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শিখা রাণী শিশুটির মেডিকেল পরীা সম্পন্ন করেন। অথচ মেডিকেল রিপোর্টে তারিখ দেখানো হয়েছে আগের দিন ২৪ জানুয়ারী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পরীা সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া দেয়া হয়েছে উচ্চ মতা সম্পন্ন এন্টিবায়োটিক ও ব্যাথানাশক ঔষধ, বুকের নীচের অংশে কালো দাগ রয়েছে এবং মানসকি অবস্থা খারাপ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অথচ চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ধর্ষণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। লিখিত বক্তব্যে শিশুটির পিতা আরও অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত মাহবুরের মা ময়জান বেগম দীর্ঘদিন ধরে নাটোর নারী ও শিশু আদালতের সরকারী এক আইনজীবির বাসার গৃহকর্মী। এর ফলে ডা. শিখা রাণীকে ওই আইনজীবি এই ভুয়া রিপোর্ট তৈরী করতে প্রভাবিত করতে পারে বলে তাদের ধারণা। এই রিপোর্টের ফলে তারা ন্যায় বিচার পাবেন না বলে আশঙ্কা করে শিশুটির পিতা ও পরিবারের সদস্যরা উচ্চতর মেডিকেল বোর্ড গঠণ করে ডাক্তারি রিপোর্ট পর্যালোচনা এবং পুরো বিষয়টি সুষ্ঠু ও নিরপে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মহামান্য হাইকোর্ট ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে কাছে। ডা. ডলি রাণীকে মুঠোফোনে এই অসঙ্গতিপূর্ণ রিপোর্টের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে লাইনটি কেটে দেন। পরে আরও কয়েকবার ফোন কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই তহছেনুজ্জামান জানান, প্রাথমিক তদন্তে আসামী ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি আরও জানান, মামলার দায়ের করার পরেরদিন আসামী মাহবুরকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে এসএসসি পরীায় অংশগ্রহণের সুযোগ দানের লে আদালত গত ৩০ জানুয়ারী তাকে ২৪ দিনের জন্য অন্তবর্তীকালীণ জামিন দেন। ধর্ষক মাহবুর বনপাড়া সেন্ট যোশেফস স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র ও শিশুটি একই শিা প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক সেকশনের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি, তার চাচী ও মামলার বাদী পরে আইনজীবি এড. মোকলেসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।