দৌলতদিয়ায় এখনো রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এখনো কঠোর বিধিনিষেধে আটকে পড়া দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা ভিড় করছেন। লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় এ ঘাটে আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড় বেশি ছিল।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার পাঁচটি ফেরিঘাটে যখন কোনো ফেরি ভিড়ছে, তাতে দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা যানবাহন সরাসরি উঠছে। আর এসব যানবাহনের সঙ্গে ঘাটে আসা শত শত নারী-পুরুষ, শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ ফেরিতে উঠে পড়ছেন। ফেরিতে ওঠার আগে তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ মোটরসাইকেল, মাহিন্দ্র, অটোরিকশা আবার কেউ কেউ প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাসে ঘাটে এসে নামছেন। ফেরিঘাট থেকে দৌলতদিয়া টার্মিনাল পর্যন্ত পণ্যবাহী গাড়ির লম্বা লাইন। ওই লাইনে শতাধিক গাড়ি ছিল।
রাজবাড়ীর পাংশা থেকে মাকে সঙ্গে করে ঢাকায় যাচ্ছেন ব্যবসায়ী চিত্ত রঞ্জন বিশ্বাস। আজ দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ব্যবসা করি। সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকি। ঈদের এক দিন পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখে বাড়ি ফিরে আসি। এর মধ্যে মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় আজ মাকে নিয়ে ঢাকায় ফিরছি। মাকে ডাক্তার দেখাতে হবে।’
কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে আসতে পথে কোথাও কোনো সমস্যায় পড়তে হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘রাস্তায় কয়েক স্থানে পুলিশ দেখেছি। তবে আমাদের কোথাও বাধা দেয়নি। একটি সমস্যা মনে হয়েছে, গণপরিবহন না থাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে ঘাটে আসতে হলো। এখন নদী পাড়ি দিয়ে ভালোয় ভালোয় কোনো যানবাহন পেলেই ঢাকা যেতে পারব।’
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরিগুলোতে যানবাহনের সঙ্গে কিছু যাত্রী দেখা যায়। অতীব জরুরি বা প্রয়োজনের তাগিদেই এসব মানুষ নদী পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। নবীনগর থেকে পারিবারিক জরুরি কাজে বাড়ি যাচ্ছিলেন মাদারীপুর সদরের জামাল শেখ। তিনি বলেন, ‘ঈদের দুই দিন পর নিজের কর্মস্থল নবীনগর চলে যাই। পরিবারের ছোট বোনের বিয়েসংক্রান্ত কাজে বাড়ি যেতে হচ্ছে।’
ফেরিঘাট এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আসগর আলী মোল্লা বলেন, ১ আগস্ট থেকে দেশের রপ্তানিমুখী সব শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণার পর ৩১ জুলাই ভোর থেকে সারা দিন হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ রাজধানীর দিকে ছুটতে থাকেন। এমনকি পরদিন রোববারও শত শত মানুষ ছোটেন। এরপর সোমবার থেকে মানুষের চাপ কমে অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। আজ মঙ্গলবার আবার মানুষের ভিড় দেখছি। হয়তো অনেকে ৫ তারিখে বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার আশায় ছিলেন। কিন্তু বিধিনিষেধ শেষ হয়নি। এ কারণে অনেকে এখনই রাজধানীর দিকে ছুটছেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক জামাল হোসেন বলেন, যানবাহন ও মানুষের চাপ কমে যাওয়ায় ফেরির সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে মোট নয়টি ফেরি চলাচল করছে। সকালের দিকে মানুষের চাপ কম ছিল, তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে থাকে।
Source: Prothomalo