খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে রাঙ্গুনিয়ার রাজপথে আওয়ামীলীগ : মাঠে নেই বিএনপি
রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি ঠেকাতে সকাল থেকেই রাঙ্গুনিয়ার রাজপথে অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবস্থান নিয়েছে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। মোটর সাইকেল, পিকআপ ভ্যান, ট্রাক বহর নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্পটে টহল দিয়েছে যুবলীগ-ছাত্রলীগ, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। এদিকে রাঙ্গুনিয়ার সর্বত্র আওয়ামীলীগের অবস্থান দেখা গেলেও মাঠে ছিল না বিএনপি ও দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দদের। তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, বিএনপির সিনিয়র নেতারা চট্টগ্রাম মহানগরীর দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছে। এদিকে রায়কে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পুলিশের টহল ছিল চোখে পড়ার মতো। মোবাইল টিম সহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। তবে কোনপ্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই উপজেলার সার্বিক পরিবেশ অন্যদিনের মতো স্বাভাবিক ছিল বলে জানায় পুলিশ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন স্পটে আওয়ামী লীগ এবং যুবলীগ-ছাত্রলীগের ওয়ার্ডভিত্তিক নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের তাপবিদ্যুত গেইট, শান্তিরহাট, গোচরা, জুটমিল গেইট, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট মিল গেইট, গোডাউন, ইছাখালী, মরিয়মনগর চৌমুহুনী, চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান, দোভাষী বাজার, পারুয়া ডিসি সড়কের ধামারহাট, শান্তিনিকেতন, চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কের রাণীরহাট, শিলক সৈয়দ আলী সড়কের দীঘির পাড়, পদুয়া রাজারহাট সহ আনুমানিক ২০টি স্পটে অবস্থান নিয়েছেন তাঁরা। এছাড়াও উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সকাল ৮টা থেকে উপজেলার ইছাখালী সদর এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। পৃথক পৃথক ভাবে তারা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের তাপবিদ্যুত গেইট থেকে চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান পর্যন্ত মোটর সাইকেল ও বিভিন্ন পরিবহণে টহল দিয়েছেন। রায় ঘোষণার পর নাশকতা বিরোধী সমাবশেও করেছে যুবলীগ। উপজলোর গোডাউন বাজারে এই সমাবশে অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ছিলেন পুলিশ। পুলিশের বিশেষ টহল দল, মোবাইল টিম, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন ছিল বলে জানা গেছে। তবে সকাল থেকেই রাঙ্গুনিয়ার সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও অন্যান্য দিনের মতো সড়কে যানবাহন চলাচল কম ছিল। রাস্তাঘাটে ছোট যানবাহন চলাচল করলেও দূরপাল্লার বড় যানবাহন দেখা যায়নি। এতে দূরের যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি খলিলুর রহমান চৌধুরী জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ছাড়াও ওয়ার্ড ও ইউনিয়নভিত্তিক নেতারা নির্ধারিত স্পটে অবস্থান নিয়েছে। রায়কে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই অবস্থান ছিল বলে তিনি জানান।
উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুচ বলেন, দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে আমরা নাশকতা এড়াতে সড়কে টহলে ছিলাম। গোডাউনে প্রতিবাদ সমাবেশও করেছি।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নুরুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগের ঘোষিত স্পটেও আমাদের নেতাকর্মীরা ছিলেন। তবে বিভিন্ন স্পটে আমাদের বড় জমায়েত ছাড়াও মোটর সাইকেলে টহলেও ছিলাম আমরা। যাতে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা নিরাপদে পরীক্ষার হলে যেতে পারে সে জন্য সকাল থেকেই আমাদের এই কাযক্রম পরিচালিত হয়েছে। যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় ছাত্রলীগ সবসময় প্রস্তুত আছে।
রাঙ্গুনিয়ার বিএনপির নেতা অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার বলেন, রাঙ্গুনিয়া জুড়ে বিএনপি নেতাদের ঘরে ঘরে পুলিশি অভিযান কারণে আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেওড়ীতে ছিলাম। গত তিনদিনে আমাদের দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীদের আটক করেছে পুলিশ। আমি নিজে ৯ জনের জামিনের আবেদন করেছি।
রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ মুহাম্মদ আহসানুল কাদের ভুঞা বলেন, রাঙ্গুনিয়ার পরিস্থিতি একেবারেই শান্ত। কোনধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায় ছিল। যেকোন প্রকার নাশকতা এড়াতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।