চিকিৎসককে পিটিয়ে হত্যা, খুলনায় ‘ধর্মঘট’ ঘোষণা

খুলনা প্রতিনিধি

ডা. মো. আবদুর রকিব খান হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুতবিচার আইনে শাস্তি নিশ্চিতকরণ ও খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত খুলনা জেলার সব চিকিৎসাসেবা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বুধবার খুলনা বিএমএর প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক ডা. সুমন রায় স্বাক্ষরিত ইমেইল বার্তায় এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

তবে শুধু কোভিড-১৯ হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকবে। খুলনা বিএমএ, বিপিএমপিএ ও বিপিএইচসিডিওএ অফিসসহ সব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন এবং সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের কালো ব্যাচ ধারণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আগামীকাল দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে চিকিৎসকদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খুলনা বিএমপি। খুলনা বিএমএর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মো. মামুনূর রশিদকে আহ্বায়ক, ডা. মো. সওকাত আলী লস্করকে যুগ্ম আহ্বায়ক, ডা. সুমন  রায়কে সদস্য সচিব এবং ডা. ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম, ডা. দেবনাথ তালুকদার রনি, ডা. এস এম তুষার আলমকে সদস্য করে আন্দোলন মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়।

রোগীর স্বজনদের হামলায় নিহত ডা. মো. আবদুর রকিব খান খুলনা রাইসা ক্লিনিকের মালিক এবং বাগেরহাট মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট টেনিং স্কুলের (ম্যাটস) অধ্যক্ষ ছিলেন। তাঁকে হত্যার প্রতিবাদে খুলনা বিএমএর উদ্যোগে চিকিৎসকরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। আজ দুপুরে নগরীর সাতরাস্তা মোড়ে বিএমএ খুলনার সামনে সড়কে এই বিক্ষোভ হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএমএ খুলনার  সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল ইসলাম। সমাবেশে স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ নেতা ডা. মেহেদী নেওয়াজ বক্তব্য দেন।

বক্তারা কাল বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। না হলে আগামীকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বুলবুল জানান, রাইসা ক্লিনিকের ঘটনায় নিহতর ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলায় এজাহারভুক্ত আবদুর রহিম নামের এক আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

গত সোমবার রাতে রাইসা ক্লিনিকে সন্তান প্রসব করতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে এক রোগীর মৃত্যু হয়। সেই রাতেই রোগীর স্বজনরা ক্লিনিক মালিক ডা. মো. আবদুর রকিব খানকে কৌশলে বাইরে ডেকে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ফেলে রেখে যায়। পরে ক্লিনিকের কর্মীরা তাঁকে প্রথমে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)ভর্তি করেন। শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় গতকাল দুপুরে দ্রুত তাঁকে শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

%d bloggers like this: