বগুড়ায় করতোয়া নদীর সৌন্দর্য্যবর্ধন ও ওয়াকওয়ে নির্মান কাজের উদ্বোধন

শিমুল  হাসান
বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় করতোয়া নদী পুন:খনন ও ডানতীরে স্লোপ প্রটেকশন কাজ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় শহর অংশে নদী খনন, ডান তীরে ৭৩০ মি: স্লোপ প্রটেকশন, সৌন্দর্য্যবর্ধন ও ওয়াকওয়ে নির্মান কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ ( বিকেলে জেলা প্রশাসক চত্বরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) বগুড়া জেলা কার্যালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সৌন্দর্য্যবর্ধন ও ওয়াকওয়ে নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, করতোয়া নদী সংরক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে সার্বক্ষণিক চেষ্টা করা হয়েছে। স্মার্ট বগুড়া গড়ার অংশ হিসেবে করতোয়া নদী খননসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান পরিবেশ সংরক্ষণ ব্যতিত আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারবো না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শে সারাদেশে পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বগুড়ায় করতোয়া নদী পুন: খননের মধ্য দিয়ে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে পাবে। এছাড়াও নদীর নাবত্যসহ সৌন্দর্য্য বর্ধনে যেসব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন হলে স্মার্ট বগুড়ায় পরিণত হবে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) বগুড়া জেলা কার্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নাতিপ্রাপ্ত) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মেজবাউল করিম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা: মকবুল হোসেন, সিভিল সার্জন ডা: শফিউল আজম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপপরিচালক মো. মতলুবর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিলুফা ইয়াসমিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন প্রমুখ। এসময় ঠিাকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন এন্ড কোং এর প্রতিনিধি হুমায়ন কবিরসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, করতোয়া নদীর নাব্যতা ফেরাতে প্রায় ৪৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। ১ম ধাপে ১৩ মার্চ বগুড়ার শাজাহানপুর অংশে খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়। পরের দিন ১৪ মার্চ ২য় ধাপে মাটিডালী এলাকায় এবং ৩য় দফায় ১৯ মার্চ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে খনন কাজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘করতোয়া নদী উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় পাউবো। প্রকল্পের আওতায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে বগুড়ার শিবগঞ্জ পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার এবং তারপর শিবগঞ্জ থেকে দক্ষিণে শেরপুর উপজেলা পর্যন্ত মোট ১০৭ কিলোমিটার অংশ পুনঃখননের কথা বলা হয়। পাশাপাশি ইছামতী নদীর ৭২ কিলোমিটার ও গজারিয়া নদীর আরও ৩৪ কিলোমিটার অংশ পুনঃখননের প্রস্তাব করা হয়। ২ হাজার ৯৪২ কোটি টাকার ওই প্রকল্পটি ২০২৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত অনুমোদনই মেলেনি।
পাউবো সূত্র বলছে, প্রকল্পটি ব্যয়বহুল হওয়ায় তার অনুমোদন প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। প্রায় দুই বছরেও বড় ওই প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ২০২৩ সালের শুরুতে পাউবোর পক্ষ থেকে করতোয়া নদীর বগুড়া শহরের ১৭ কিলোমিটার অংশ এবং পাশের সুবিল খাল ও অটো খালের ২৭ কিলোমিটার অংশসহ মোট ৪৪ কিলোমিটার পুনঃখননের প্রকল্প নেওয়া হয়। ব্যয় ৪৭ কোটি টাকা হওয়ায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাতে হয়নি। ২০২৩ সালের অক্টোবরে সেটি অনুমোদন পেয়ে যায়। এরপর টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়। মূলত সেই প্রকল্পেরই কাজ শুরু হলো। পাউবো বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান  মাত্র ১৭ কিলোমিটার অংশ খনন করে পুরো নদীর নাব্য ফেরানো সম্ভব নয়। যেহেতু মূল প্রকল্পটি অনুমোদনে বিলম্ব হচ্ছে সে কারণে ছোট আকারে কাজ শুরু করেছি। আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। আশা করছি এ কাজ শেষ হওয়ার আগেই মূল প্রকল্পটির অনুমোদন হয়ে যাবে। তখন ১৭ কিলোমিটার অংশ বাদ দিয়ে কাজ করা হবে।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ