শ্রীপুরে নিখোঁজ বাবা-মেয়েকে ঘিরে স্বজনদের উদ্বেগ বেড়েই চলছে
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি : নেপালে ত্রিভুবন বিমান বন্দরে সোমবার (১২মার্চ) দুপুরে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলার বিমানে ছিলেন গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা গ্রামের ফারুক হোসেন প্রিয়ক ও মেহেদী হাসান দম্পতির পাঁচ সদস্য। সবশেষ তথ্যমতে তিনজনের বেঁচে থাকার কথা নিশ্চিত হলেও ফারুক হোসেন ও তাঁর তিন বছর বয়সী কন্যা প্রিয়ংময়ী তামাররা’র এখন পর্যন্ত কোন খোঁজ মেলেনি। কি ঘটেছে তাদের ভাগ্যে, এখনও তা জানতে পারেননি পরিবারের একমাত্র বেঁচে থাকা সদস্য ফারুকের মা ফিরোজা বেগম।
বুকের একমাত্র ধন হারানো আশংকায় বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন তিনি। ফারুক ও তাঁর ছোট্ট কন্যার খোঁজ নিতে তাঁর স্বজন ও প্রতিবেশীরা গতকাল থেকেই ভিড় করছেন তাঁর বাড়ীতে। কেউ এসে তাকে দিচ্ছেন শান্তনা, আবার কেউ শুনাচ্ছেন আশার বাণী “ফিরে আসবে তাঁর ছেলে ও নাতনী”।
এদিকে নিখোঁজ ও আহতদের খোঁজ নিতে স্বজনরা মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় নেপালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বলে জানা গেছে। স্বজনদের মধ্যে মেহেদী হাসানের শ্বাশুড়ি সালমা বেগম, ফারুক হোসেনে বন্ধু সোহানুর রহমান সোহাগ ও মাহবুবুর রহমান রয়েছেন।
উপজেলার জৈনাবাজার এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক লাগোয়া গুলশান স্পিনিং মিল সংলগ্ন ফারুকের দৃষ্টি নন্দন ডুপ্লেক্স বাড়ি। ফারুকের বাবা শরাফত আলী মারা গেছেন প্রায় ৫বছর হলো। শরাফত-ফিরোজা পরিবারের একমাত্র সন্তান ফারুক হোসেন। বাবা মারা যাওয়ার পর মা ফিরোজা, তাঁর স্ত্রী আলমুন নাহার এ্যানি, তাদের এক মাত্র সন্তান প্রিয়ংময়ী তামাররা নিয়েই তাদের সাজানো একটি সংসার। একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী বিষয়ে ¯œাতক ডিগ্রী অর্জনের পর নেশা হিসেবে ফটোগ্রাফিতে নজর দেন। তাঁর প্রিয় শখ ছিল ছবি তোলা। ছবি তুলে ইবহমধষ ওসধমব ঘধঃরড়হধষ চযড়ঃড় ঈড়হঃবংঃ ২০১৬ পদক জিতে নিয়েছিলেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল আন্তর্জাতিক মানের একজন ফটোগ্রাফার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা।
নিখোঁজ ফারুক হোসেনের মামা মশিউর রহমান নয়েস জানান, গত সোমবার দুপুরে বিমান বিধ্বস্তের খবরে ফারুকের মা অচেতন হয়ে গেছেন। কখনও জ্ঞান ফিরছেন আবার কখনও মুর্ছা যাচ্ছেন। সন্ধ্যার পর তিন সদস্যের বেঁচে থাকার খবর জানার পরও নিখোঁজ দুজনের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা আমরা এখনও জানতে পারিনি। মঙ্গলবার দুপুরে ফারুকের বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে থেমে থেমে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছে পরিবারের লোকজন।ফিরুজা বেগমের আকুতি সরকার দ্রুত সন্তানের মৃত দেহ ও জীবিত দের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্তা করেন।
এদিকে, নিখোঁজ সদস্যদের বাড়ীতে স্বজনদের শান্তনা দিতে গত রাতেই জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা আকতার উপস্থিত হন।