নিউজ ডেস্ক : গণতন্ত্র ধ্বংস হতে চলেছে দাবি করে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের অধিকারের পক্ষে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান, সব প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, গণতান্ত্রিক শক্তি এবং সুশীল সমাজের প্রতি অনুরোধ জানাব আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। তিনি আরো বলেন, অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়ন করে কেউ কখনো ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না। যাদের এভাবে ক্ষমতায় যেতে হয়েছে বা থেকেছে তাদের ফল কিন্তু সুখকর হয়নি। অনুরোধ করব ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষের মন বোঝার চেষ্টা করুন। অবিলম্বে খালেদা জিয়াসহ অন্য নেতাদের মুক্তি দিন। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করুন যাতে সব দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ সব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যেসব কর্মসূচি দিচ্ছি তা একেবারেই শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়। অথচ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে দিচ্ছে না সরকার। গতকাল আমাদের শান্তিপূর্ণ অনশন কর্মসূচি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত করার কথা ছিল। হঠাৎ করে আমাদের বলা হলো দুপুর ১টার মধ্যে কর্মসূচি শেষ করতে হবে। আমরা অশান্তি চাই না। আমরা সংঘাত চাই না বলেই আমরা ১টা পর্যন্ত কর্মসূচি করেছি। এর মধ্যেও আমাদের কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলাগুলোতে কোথাও দাঁড়াতেই দিচ্ছে না। বিএনপিকে কোনো স্পেসই দেয়া হচ্ছে না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটাই হচ্ছে বড় লক্ষণ যে, তারা নকশা তৈরি করেছে যেদিকে তারা যেতে চায়। তারা নাশকতার কথা বলে বাধা দিচ্ছে। নাশকতার তো প্রশ্নই উঠে না। কারণ আমাদের কর্মসূচি হচ্ছে শান্তিপূর্ণ। অথচ নাশকতার কথা বলে গ্রেফতার করা হচ্ছে।’
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা একদিকে বলছেন গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দেবেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ডিএমপি কমিশনার বলেছেন এমনকি প্রধানমন্ত্রী বিদেশ যাওয়ার আগেও বলেছেন। তাহলে কেন বাধা দেয়া হচ্ছে। একটা স্থানেও দেখাতে পারবে না কর্মসূচিকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা সংঘাত হচ্ছে। আজকে এভাবে গণগ্রেফতার করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করা, যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে। তিনি বলেন, আমরা দেশে একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থা তৈরি করতে চাই জনগণ যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে সরকার সেটা চায় না। চায় না বলেই এসব করছে। নাশকতা কে করছে, আপনারা (সরকার) করছেন। সন্ত্রাস কে করছে, আপনারা করছেন। সন্ত্রাস করে গোটা পরিবেশকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে সকলের অংশগ্রহণে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটা সমাবেশের অনুমতি চাইব। আমরা শিগগিরই করব। আশা করি কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেবেন। আমরা বসে তারিখ নির্ধারণ করব। খালেদা জিয়ার রায়ের সার্টিফাইড কপি ও সাজা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই শঙ্কা আমাদের প্রথম থেকেই শুরু হয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে মামলা শেষ করায়। শঙ্কা তৈরি হয়েছে, যেখানে তাকে রাখা হয়েছে সেখান থেকে। রায়ের কপিতে সই করতে এক সপ্তাহ লেগে গেল। আমরা এখনো সার্টিফাইড কপি পাইনি। সার্টিফাইড কপি পেতে রবিবার, এরপর আবার কি হবে। আমরা আশঙ্কা করছি শুধু রায়ের ব্যাপার নয় আরও কি কি আসবে আমরা জানি না। কারণ এই সরকারের লক্ষ্যই হচ্ছে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। দলকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা। তারা সর্বক্ষেত্রে বল প্রয়োগ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায়, চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Post Views: 460